শুক্রবার সকালে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অনেক বীজতলার চারাগাছ অতিরিক্ত ঠাণ্ডা ও শৈত্য প্রবাহের কারণে ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
আরও পড়ুন: গম চাষে উৎসাহিত করতে নাটোরে বিনামূল্যে বীজ বিতরণ
উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণী ইউনিয়নের কৃষক মজিবর রহমান জানান, শীতে অর্ধেক বীজে চারা জন্মায়নি। যেগুলো জন্মেছে এখন তার চারা নষ্ট হয়ে যাওয়ার মুখে পড়েছে। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদী অববাহিকার বেশির ভাগ বীজতলা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো বীজের তীব্র সংকট, বিপাকে কৃষকরা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান, চলতি বোরো মৌসুমে প্রায় ১ লাখ ১২ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জন্য ৬ হাজার হেক্টর জমিতে কৃষকরা বীজতলা তৈরি করেছেন। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১ হাজার ৪৫ হেক্টর, উপসী জাতের ৩ হাজার ৮৬৬ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ১৯০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বোরো বীজতলা রক্ষায় কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
চলতি বোরো মৌসুমে চাহিদার চেয়ে বেশি বীজতলা তৈরি করায় চারা সংকটের কোনো সম্ভবনা নেই বলে দাবি করেন এ কৃষি কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: উফসী জাতীয় ধানের বীজ সংকটে শাল্লার কৃষক
এদিকে, জেলায় শীতে জনজীবনও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদী অববাহিকার ছিন্নমূল হতদরিদ্র মানুষজন শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাচ্ছে। রাতে কুয়াশায় ঢেকে যায় জনপদ।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ শুক্রবার সকালে এ অঞ্চলে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সেই সাথে কয়েক দিন ধরে এ জেলায় উত্তরের হিমেল হাওয়া বইছে, যা চলতি সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে কৃষকের আশার আলো কমিউনিটি, ভাসমান বীজতলা
কুড়িগ্রামের কৃষকদের জন্য সদ্য সমাপ্ত ২০২০ সাল ছিল এক কঠিন বছর। করোনাভাইরাস মহামারির পাশাপাশি পরপর পাঁচ দফা বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে জেলায় কৃষির ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলো। তাদের অনেকের গৃহিণীরা সংসারের অনটন মেটাতে হয়ে উঠেছেন ধান চাষের বিকল্প ফসলের কৃষাণী।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বন্যা: পচে যাওয়া বীজতলা নিয়ে দিশেহারা কৃষক
সম্প্রতি সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সুভারকুটি গ্রামে ঘুরে দেখা যায় কৃষাণীদের কর্মযজ্ঞ। বন্যায় নষ্ট হয়ে যাওয়া ধান খেতে তাদের কেউ লাগিয়েছে শশা, কেউ সিম, কেউ কুল বড়ই ও পেঁপেসহ নানা সবজি।
সুভারকুটি গ্রামের পাশাপাশি বন্যাকবলিত পাঁচগাছী, যাত্রাপুর ও উলিপুর উপজেলার বজরা এবং বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষাণীরাও এখন বিকল্প চাষাবাদ করে ভাগ্য বদলানোর স্বপ্ন দেখছেন।